Summary
মহাযুদ্ধ বা প্রথম বিশ্বযুদ্ধ ২৮ জুলাই, ১৯১৪ থেকে ১১ নভেম্বর, ১৯১৮ পর্যন্ত সংঘটিত হয়। এটি মূলত শক্তিশালী অর্থনৈতিক পরাশক্তির মধ্যে ক্ষমতার দ্বন্দলের ফলস্বরূপ।
পক্ষসমূহ:
- অক্ষশক্তি: জার্মানি, অস্ট্রিয়া-হাঙ্গেরি, ইউসমানীয় সাম্রাজ্য, বুলগেরিয়া
- মিত্রশক্তি: যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, রাশিয়া, ইতালি, জাপান
যুদ্ধের মূল কারণ ছিল জার্মানদের উগ্রজাতীয়তাবাদের নীতি। যুদ্ধকালীন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ছিলেন উড্রো উইলসন, যিনি ১৪ দফা ঘোষণা করেন যা যুদ্ধের সমাপ্তিতে ভূমিকা রাখে। যুক্তরাষ্ট্র ১৯১৭ সালের ৬ এপ্রিল জার্মানির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে।
১১ নভেম্বর, ১৯১৮ সালে জার্মানি আত্মসমর্পণ করে, এবং যুদ্ধের সমাপ্তি ঘটে। যুদ্ধ বিরতির চুক্তি প্যারিস শান্তি চুক্তি নামে পরিচিত এবং ভার্সাই চুক্তি ২৮ জুন, ১৯১৯ সালে স্বাক্ষরিত হয়। লীগ অব নেশন ১৯৪৬ সালে বিলুপ্ত হয়।
ইউরোপে ২৮ জুলাই, ১৯১৪ থেকে ১১ নভেম্বর, ১৯১৮ পর্যন্ত সংঘটিত হওয়া ভয়াবহ যুদ্ধটি 'মহাযুদ্ধ বা Great Har' নামে পরিচিত। এটি মূলত Great Economic Powers এর মধ্যে ক্ষমতার মনের প্রতিফলন ছিল Great War'। শেষ হয় ১১ নভেম্বর ১৯১৮ সালে জার্মানির আত্মসমর্পণের মাধ্যমে।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পক্ষসমূহ | ||||||
|---|---|---|---|---|---|---|
অক্ষশক্তি | জার্মানি | অস্ট্রিয়া | হাঙ্গেরি | উসমানীয় সাম্রাজ্য | বুলগেরিয়া | * |
মিত্রশক্তি | যুক্তরাজ্য | যুক্তরাষ্ট্র | ফ্রান্স | রাশিয়া | ইতালি | জাপান |
জেনে নিই
- প্রথম বিশ্বযুদ্ধ The Great War নামে পরিচিত
- প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয়- ২৮ জুলাই, ১৯১৪ সালে।
- প্রথম বিশ্বযুদ্ধের প্রধান কারণ ছিল জার্মানীদের উগ্রজাতীয়তাবাদ নীতি।
- প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ছিলেন উড্রো উইলসন (২৮তম)।
- উড্রো উইলসনের ১৪ দফা ঘোষণার মধ্যে দিয়ে প্রথম বিশ্বযুদ্ধ সমাপ্ত হয় ।
- প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় মিত্রশক্তির প্রধান ছিল- জেনারেল ফচ ।
- প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় আমেরিকার যুদ্ধ জাহাজ 'লুসিতানিয়া' ডুবিয়ে দেয়- জার্মানি।
- যুক্তরাষ্ট্র- জার্মানির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে- ১৯১৭ সালের ৬ এপ্রিল ।
- প্রথম বিশ্বযুদ্ধে- অক্ষশক্তি পরাজয় বরণ করে।
- প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় জার্মানির চ্যান্সেলর ছিলেন- অটোভন বিসমার্ক।
- প্রথম বিশ্বযুদ্ধে জার্মানি আত্মসমর্পন করে- ১১ নভেম্বর ১৯১৮ সালে।
- প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সমাপ্তি হয় ১১ নভেম্বর ১৯১৮ সালে
- প্রথম বিশ্বযুদ্ধ বিরতির চুক্তির নাম প্যারিস শান্তি চুক্তি ১৯১৮ সাল।
- প্রথম বিশ্বযুদ্ধ বিরতি চুক্তি হয় জার্মানি ও মিত্রপক্ষের মধ্যে প্যারিস চুক্তির ম্যাধ্যমে।
- ভার্সাই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় ২৮ জুন ১৯১৯ সালে।
- লীগ অব নেশন ১৯৪৬ সালে আনুষ্ঠানিক ভাবে বিলুপ্ত হয়।
# বহুনির্বাচনী প্রশ্ন
অস্ট্রিয়ার হবু সম্রাট ও সম্রাজ্ঞী, আর্কডিউক ফার্ডিনান্ড এবং সোফিয়া, বসনিয়া সফরে যান। ২৮শে জুন, ১৯১৪ বসনিয়া-হার্জেগোভিনার সারায়েভো শহরে অস্ট্রিয়ার যুবরাজকে হত্যা করে সার্বিয়ার গ্যাবরিয়েল নামে এক নাগরিক জাতি হিসেবে সার্ব হওয়ায় অস্ট্রিয়া সার্বিয়ার থেকে বিচার চায়, সেই সাথে ক্ষতিপূরণ সার্বিয়া কিছু শর্ত মানলো, কিছু মানলো না। অস্ট্রিয়া ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিলো এবং সময় ফুরিয়ে গেলে অস্ট্রো-হাঙ্গেরি ২৮শে জুলাই সার্বিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে। অস্ট্রিয়াকে সরাসরি সাহায্য করে জার্মানি।
বিশ্বযুদ্ধের অন্যান্য কারণ
- ১৮৭১ সালে অটো ভন বিসমার্ককের জার্মানির মিত্রতার নতুন কূটনীতি
- Tripple Alliance' ও 'Tripple Entente' এর প্রভাব
- সার্বিয়ার ব্লাক হ্যান্ড' নামক গুপ্ত বাহিনী গঠন করে। খনিজসমৃদ্ধ বলকান অঞ্চলের প্রতি লোভ ।
- ১৯১৭ সালের ৬ এপ্রিল জার্মান নৌ-বাহিনী আটলান্টিক মহাসাগরে মার্কিন জাহাজকে ব্রিটিশ জাহাজ মনে করে আক্রমণ করলে যুক্তরাষ্ট্র ঐ দিনই জার্মানির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করা ।
- ভার্সাই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় ২৮ জুন ১৯১৯ [কার্যকর ১০ জানুয়ারি ১৯২০]
- জাতিপুঞ্জ আনুষ্ঠানিকভাবে গঠিত হয় ১৯২০ সালের ১০ জানুয়ারি ।
- জাতিপুঞ্জ গঠনের প্রস্তাবক মার্কিন প্রেসিডেন্ট উড্রো উইলসন।
- প্রধান উদ্দেশ্য- আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
- বিভাগ ছিল ৩টি (অ্যাসেম্বলি, কাউন্সিল ও সচিবালয়)।
- প্রথম কাউন্সিলের অধিবেশন বসে ১৬ জানুয়ারি ১৯২০ ।
- প্রতিষ্ঠাকালীন মোট সদস্য ৪২টি দেশ।
- স্থায়ী সদস্য ছিল ৪ টি- ব্রিটেন, ফ্রান্স, ইতালি ও জাপান ।
- ১৯১৭ সালে লেনিন এক কৃষক সম্মেলনে যুদ্ধ হতে রাশিয়ার নাম প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন ।
- প্রত্যাহারের ঘোষণাটি পিস ডিক্রি নামে পরিচিত ছিল।
- এর মূল উদ্দেশ্য ছিল শান্তি প্রতিষ্ঠা করা।
- উড্রো উইলসন এই প্রস্তাবের আলোকেই ১৪ দফা ঘোষণা করে।
বেলফোর ঘোষণা (তারিখ ২ নভেম্বর ১৯১৭) হল ব্রিটিশ ইহুদি সম্প্রদায়ের একজন নেতা ব্যারন রথচাইল্ডের কাছে যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র সচিব আর্থার জেমস বেলফোরের লেখা একটি চিঠি। জায়নিস্ট ফেডারেশন অব গ্রেট ব্রিটেন এন্ড আয়ারল্যান্ড নামক সংগঠনের কাছে পাঠানোর জন্য চিঠিটি তাকে দেয়া হয়। সেটাই ইতিহাসে বেলফোরের ঘোষ নামে পরিচিত।
- ইহুদিরা ফিলিস্তিনে মাতৃভূমি গঠনের অধিকার লাভ করে বেলফোর ঘোষণার ফলে।
- বেলফোর ঘোষণা করা হয়- ১৯১৭ সালে।
- ‘ইহুদিদের চক্রান্তে ফিলিস্তিনিরা তাদের মাতৃভূমি হারায়- ১৯৪৮ সালে।
- পৃথিবীর একমাত্র ইহুদি রাষ্ট্র- ইসরাইল।
- ইহুদী বিজ্ঞানী চাইম ওয়াইজম্যানের 'এসিটোন বিস্ফোরক আবিষ্কার করে বৃটিশদের পরাজয় হাত থেকে রক্ষা করে ।
- তার পুরস্কার স্বরূপ চাইম ওয়াইজম্যানকে ১৯১৭ সালে লন্ডনে এক সংবর্ধনা দেয়া হয় সেখানে ওয়াইজম্যান প্যালেস্টাইনে ঈশ্বরের প্রমিজ (promised land) অনুযায়ী ইহুদী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার দাবী উত্থাপন করেন।
- তাকে খুশি করতেই তৎকালীন বৃটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী আর্থার বেলফোর ইহুদী নেতা রথচাইল্ডকে প্যালেস্টাইনে একটি ইহুদী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পত্র লিখেন যা ইতিহাসে বেলফোর ঘোষণা নামে পরিচিত।
- বৃটিশ লাইব্রেরিতে পত্রটি সংরক্ষিত আছে
- বেলফোর ঘোষণার ৩১ বছর পর ১৯৪৮ সালে ইসরাইল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হয়।
# বহুনির্বাচনী প্রশ্ন
- প্রথম বিশ্বযুদ্ধ চলাকালে ১৯১৮ সালের ৮ জানুয়ারি মার্কিন কংগ্রেসে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট উড্রো উইলসন প্রথম বিশ্বযুদ্ধ বন্ধে করণীয় ও শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য ১৪টি দফা উত্থাপন করেন যা Fourteen Points নামে পরিচিত।
- ১৪ দফার প্রথম দফা- উন্মুক্ত কূটনীতি ও শান্তিপূর্ণ প্রতিষ্ঠা ।
- ১৪ দফার ১৪তম দফা- জাতিপুঞ্জ প্রতিষ্ঠার কথা বলা আছে।
- প্রথম বিশ্বযুদ্ধের প্রভাবে (১৯২৯-১৯৩৯) সাল পর্যন্ত মার্কিন শেয়ার বাজারে যে অর্থনৈতিক ধ্বস নামে তাই ইতিহাসে মহামন্দা বা Great Depression নামে পরিচিত।
- ১৯২৯ সালের ২৯ অক্টোবর শেয়ার বাজারে সবচেয়ে ভয়াবহ ধ্বস নামার কারণে দিনটিকে Black Tuesday বলা হয় ।
- ১৯১৭ সালে জার সাম্রাজ্যের পতন ঘটে।
- ১৯১৮ সালে জার্মান সাম্রাজ্যের পতন হয়।
- ১৯১৮ সালে অস্ট্রো-হাঙ্গেরি সাম্রাজ্যের পতন ঘটে।
- ১৯২২ সালে অটোমান সাম্রাজ্যের পতন ঘটে ।
- ১৯২৯ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ফ্রাংকলিন রুজভেন্ট যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বব্যাপী যে অর্থনৈতিক সংকট দেখা দেয় তা মোকাবেলা করতে অর্থনৈতিক ব্যবস্থা প্রবর্তন করেন, সেটাই নয়া নীতি বা New Deal
- রুজভেল্টের এই নয়া নীতির প্রেক্ষিতে তৎকালীন মার্কিন অর্থ সচিব মিস্টার হোয়াইট একটি পরিকল্পনা দেন যা White Plan নামে পরিচিত।
- এই প্রেক্ষিতেই ১৯৪৪ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ব্রিটন উডস অঙ্গরাজ্যে ব্রিটন উডস সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এই সম্মেলনেই মার্কিন ডলারকে আন্তর্জাতিক মুদ্রা হিসেবে ঘোষণা করা হয়। এই সম্মেলন থেকে ৩টি অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানের জন্ম হয় । যথা: World Bank, IMF, GATT
- এই প্রতিষ্ঠানসমূহ একত্রে 'ব্রিটন উডস ইনস্টিটিউসনস' বলা হয়।
- ১৯২০ সালে ফ্রান্সের সেভার্স শহরে ১৩টি দেশ মিলে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করে অটোমান সাম্রাজ্যকে শাস্তি প্রদান ও তুরস্কের আত্মসমর্পণের জন্য ।
- এই চুক্তিটি সেভার্স চুক্তি নামে পরিচিত। এই চুক্তিতেই বলা হয়, সিরিয়া ও লেবানন ফ্রান্সের অধীনে থাকবে এবং ইরাক ও ফিলিস্তিন বৃটেনের অধীনে থাকবে।
- ১৯২৫ সালে সুইজারল্যান্ডের লৌকর্নতে ৭টি চুক্তির সমঝোতা করা হয়। সেখানে লন্ডনে জার্মানি, ফ্রান্স, বৃটেন, বেলজিয়াম, ও ইতালি এই ৫টি দেশ মিলে চূড়ান্তভাবে চুক্তিটি স্বাক্ষর করে বৃটেনের তত্ত্বাবধানে।
- লৌকর্ন চুক্তির উদ্দেশ্য:
জাতিপুঞ্জে জার্মানিকে নিয়ে আসা।
ফ্রান্সের সাথে জার্মানির বিরোধের মীমাংসা।
Read more